মোহাম্মদ শাহাদাত আলম অন্তর : নগরীতে টানা ১২ ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এমন টানা বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। গতকাল সোমবার ভোরবেলা থেকেই কুমিল্লা নগরীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এরপর সকাল ৬টার দিকে ভারী বৃষ্টি পড়তে শুরু করে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৃষ্টি ঝরছে। সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে নগরীর কান্দিরপাড় থেকে রাণীরবাজারমুখী সড়ক, অশোকতলা মোড় এলাকা, পুলিশ লাইন, রেসকোর্স, বাগিচাগাঁও, রাজগঞ্জ, ভাটপাড়া, ধানমন্ডি, বিসিক এলাকা, ঠাকুরপাড়া, সিটি কর্পোরেশন এলাকার বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এতে হাঁটু পানিও জমেছে বেশ কয়েকটি স্থানে। ছাতা নিয়ে বের হয়ে কিংবা হাঁটু সমান প্যান্ট তুলেও বৃষ্টির পানি ভেজা থেকে রেহাই মিলছে না পথচারীদের। এদিকে ভারী বৃষ্টির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে। সড়কে পানি জমে যাওয়ায় গন্তব্যে পৌঁছাতে দিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে। তারপরও রিকশা ও সিএনজি পাওয়া যাচ্ছে না। কুমিল্লা নগরীর ধর্মপুর ভিক্টোরিয়া কলেজ এলাকা থেকে কান্দিরপাড় এলাকায় অটোরিকশায় করে যাচ্ছিলেন শাহাদাত হোসেন। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, এখান থেকে কান্দিরপাড় পর্যন্ত ভাড়া ১০ টাকা, কিন্তু বৃষ্টিতে কান্দিরপাড়ে পানি জমায় সেখানে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে। কান্দিরপাড় এলাকায় কথা হয় বিশ্বরোড থেকে আসা আমজাদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিশ্বরোড থেকে কান্দিরপাড় সিএনজিতে ২০ টাকা নিয়মিত ভাড়া। কিন্তু বৃষ্টি হওয়ার কারণে সেটা ৩০ টাকা হয়ে গেছে এখন। কি আর করবো, গন্তব্যে তো পৌঁছাতে হবে। এদিকে ভারী বৃষ্টিতে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় যানজট তৈরি হয়েছে। মূল রাস্তায় হাঁটু পানি। হেঁটে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। রিকশায় ৫০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা। এমন অবস্থা জানলে আজ বেরই হতেন না বলে জানালেন অশোকতলা এলাকার বাসিন্দা নিয়াজ মাহমুদ। রাস্তায় যানবাহনের চাপ কম থাকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান বেশ কয়েকজন পথচারী। নগরীর ঠাকুরপাড়া এলাকায় সড়কে পানি জমে যাওয়ার কারণে আধা ঘণ্টা ধরে অপেক্ষার পরও রিকশা পাননি কবির হোসেন নামে এক পথচারী। তিনি বলেন, সড়কে যে পানি জমেছে, তাতে জুতা খুলে নিলেও প্যান্ট ভিজে যাবে। সকাল ৯টায় দোকান খুলি। বৃষ্টি দেখে এক ঘণ্টা পরও যেতে পারিনি। রিকশার অপেক্ষায় আছি। এদিকে জেলা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এমন বৃষ্টিপাত আরো দু-একদিন থাকতে পারে। জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ২৪ ঘণ্টায় সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৯৮ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। লঘু চাপের কারণে অসংখ্য মেঘমালা তৈরি হয়েছে যার কারণে এমন টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আরো দু-একদিন এভাবে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
Leave a Reply