শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আওয়ামী লীগের নাশকতা রুখতে মাঠে ছাত্রশিবির সুনামগঞ্জে ভুয়া ব্যবসায়ী সেজে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রের মূলহোতা সহ গ্রেপ্তার ৬ কুমিল্লা নাশকতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে রাজপথে সমমনা ৮ দলের অবস্থান তৃণমূলের দাবিতে মুখর কুমিল্লা বিএনপি  কুমিল্লায় ডাকাতি প্রস্তুতিকালে আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার কুমিল্লায় মাদক সেবনে বাধা দেয়ায় নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা দিরাই-শাল্লায় আজমল হোসেন চৌধুরী জাবেদের পক্ষে বিএনপির গণমিছিল ও সমাবেশ পঞ্চগড় বিপি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে “Empowered Living” শীর্ষক মোটিভেশনাল আলোচনা সভা শিক্ষক নিয়োগে সুপারিশ থাকলে মানসম্মত শিক্ষক পাবেন না, এতে প্রতিষ্ঠান কলঙ্কিত হবে : আবুল কালাম খিলা আজিজ উল্যাহ উচ্চ বিদ্যায়লয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত
শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০২:০৩ পূর্বাহ্ন

খুলনায় নিহতের ঘটনায় অর্ধশতাধিক বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ

Reporter Name / ৩০৮ Time View
Update : শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

দিঘলিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি : খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাটের কোলা বাজারে সংঘর্ষে ফারুক মীর (৩৮) নামক ইউপি সদস্য নিহতের ঘটনার জের ধরে আজ শুক্রবার দুপুরে অর্ধ শতাধিক লোক জনের বাড়িতে হামলা, ভাঙ্গচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পৌণে ৬টার দিকে দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট ইউনিয়নের কোলা বাজারে এ হামলা ও হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের ঝুপির কোপে জসিম নামে একজন আহত হন। জসিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহত ফারুক মীর পার্শ্ববর্তী তেরোখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর উত্তর কোলা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং একই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি গাউস মীরের পুত্র।

তেরোখাদা পুলিশ ও টহলরত সেনা বাহিনীর সদস্য টিম শুক্রবারের ভাঙ্গচুরের ঘটনা সরেজমিনে ঘুরে দেখেছেন। তেরোখাদা পুলিশ ও টহলরত সেনা বাহিনীর টিম কোলা বাজারে অবস্থান করছিলেন। এ সময় দাউদ নামে এক মুরব্বি লোক সেনা টিম ও পুলিশকে জানায় মধুপুর এলাকায় প্রতিপক্ষের লোজন তাদের গরু খুলে নিয়ে গেছে। গরুর কাছে দাউদের পুত্র বধূ আছে। গরুগুলো উদ্ধার করে দিন। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যগণ তাদের গাড়ি নিয়ে লোকটার কথামত কোলা বাজার ত্যাগ করার সাথে সাথে দেশী অস্ত্র নিয়ে বহিরাগত লোকজন নিহতদের স্বজনদের সাথে সংঘবদ্ধ হয়ে কোলা বাজারের পূর্বদিকে নয়া বারাসাত গ্রামে ঢুকে পড়ে। এ সময় তারা খাল পাড়ের লম্বা লাইনে অর্ধশতাধিক লোকের বসতবাড়িতে হামলা, ভাঙ্গচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়।

এদিকে আজ শুক্রবার বিকালে নিহতের লাশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে নিজ বাড়িতে নিয়ে এলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজনদের ও আশপাশের লোকজনের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। গত বৃহস্পতিবার আসরের নামাজের পর এ হামলা ও কোপাকুপির ঘটনা ঘটে। সূত্র থেকে জানা যায়, পূর্ব কলহের জের ধরে জনৈক মনিরুল মোল্যার নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার মোঃ কবির, নেহাল উদ্দিন, মোহাম্মাদ কাজী, রিপন, রবিউল, কাজল রেখা, এসকেন কাজী, মালেক, বিল্লাল কাজী, উবাই, নুরু ও সাইফুল ইসলামসহ ২৫/৩০ জনের একটা সংঘবদ্ধ দল গোপন জায়গায় বসে হামলা, নিহত ফারুক মীর ও গুরুতর আহত জসিমকে হত্যার নীল নক্সা নিয়ে পরামর্শ করছিল। আসরের নামাজের পর তারা প্রথমে জসিমের উপর চড়াও হয়। কোলা বাজারের পশ্চিম গলিতে তাকে ধারালো রাম দা ও ঝুপি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরবর্তীতে তারা বিল্লাল ডাক্তারের দোকানে বসা ফারুখ মীরের উপর চড়াও হয়। এবং তাকে মারতে শুরু করে। এ সময় আগত লোকজন বিল্লাল ডাক্তারের দোকান ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করে। এক ফাঁকে তেরোখাদা উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মীর ফারুক জীবন বাঁচাতে দৌঁড়ে পালিয়ে পিছন দিকে শফিকুলের বাড়ির ভেতর ঘরে ঢুকে পড়ে। এ সময় চিহ্নিত সন্ত্রাসী দুর্বৃত্তরা উক্ত বাড়ির ঘরের মধ্য থেকে টেনে হিঁচড়ে বাইরে নিয়ে আসে। এসময় তারা ধারালো রাম দা ও ঝুপি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তার হাত, পা, কোমরসহ নানা জায়গায় এলোপাথারীভাবে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এ সময় তারা একে একে ফারক মীর, জসিম মীর, গাউস মীর, ইলিয়াস মিনাসহ ১০জনকে কুপিয়ে মারাত্নক আহত করে। এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ফারুক মীরের মৃত্যু হয়। আহত জসিম মীরের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এদিকে আজ শুক্রবার দুপুরে বহিরাগত একটা সংঘবদ্ধ মহল নিহত ফারুকের স্বজনদের নিয়ে পূর্বের বিবাদমান ও হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় অর্ধ শতাধিক লোকের বসতবাড়িতে হামলা ও ভঙ্গচুরের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ সকল বাড়ি থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্রসহ মূল্যবান জিনিস পত্র লুটপাট হয়েছে।

কোলা বাজারসহ উক্ত এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। উল্লেখিত গাজীরহাট এলাকায় দিবালোকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গোলাগুলির মহড়া চলেছে। ঘটেছে দুই পক্ষের সংঘর্ষ। হতাহতের রক্ত না শুকাতেই আবার সংঘর্ষের ও মৃত্যুর ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় স্থানীয় মাঝিরগাতী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মোঃ মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, দিঘলিয়া ও তেরোখাদা থানা পুলিশের মাঝে এখনও পূর্ব ইমেজ ফিরে আসেনি। হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বিজয় উল্লাসের ছত্রচ্ছায়ায় একটা স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্দোনে এ এলাকায় সরকারি গাছ কাটা, পুকুর ও ঘের দখল, নিরব চাঁদাবাজী, প্রভাব বিস্তারে নানা হুমকি ধামকিসহ নানা অপরাধমূলক ঘটনা নিরবে ঘটে চলেছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা এ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকসহ কোনো মহলকে আশ্বস্ত করতে পারছেন না। বরং উল্লেখিত মোহলের অপতৎপরতায় সাধারণ মানুষের মাঝে শঙ্কা কাজ করছে। কখন বড় ধরণের কি ঘটনা ঘটে এ আশঙ্কায় এ এলাকার মানুষের কাটছে নির্ঘুম রজনী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা

সম্পাদকীয়

সম্পাদক ও প্রকাশক