আজ ১৭ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

খুলনায় বাঁধ ভেঙে দুই উপজেলা প্লাবিত, তলিয়ে হাজার বিঘা মাছের ঘের

শাহাদাত হোসেন নোবেল,  দিঘলিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি : খুলনায় বেড়িবাঁধ ভেঙে দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে খুলনা নগরীর বেশিরভাগ রাস্তা।

খুলনার দাকোপ উপজেলায় শিবসা নদীর তীব্র স্রোতে পানখালী বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে মাছের ঘের।

একই সময় পাইকগাছার দেলুটি ইউনিয়নের কালিনগর এলাকায় ওয়াপদার বাঁধ ভেঙে কালিনগর, হরিণখোলা, দারুণমল্লিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে গেছে।

এলাকাবাসী জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের ২২ নম্বর পোল্ডারের কালিনগর বাওয়ালী বাড়ির দক্ষিণ পাশের পূর্বের আম্ফানের ভাঙনের দক্ষিণের প্রায় ৩০০ ফুটের বেশি এলাকাজুড়ে ওয়াপদার রাস্তা অতি জোয়ারের পানিতে ভেঙে যায়। ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে যাওয়ার পাশাপাশি ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে মৎস্য ঘের, বীজতলাসহ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এলাকাবাসী বাঁধ মেরামতের কাজ করলেও বিপদের শঙ্কা দূর হচ্ছে না। প্রবল স্রোতের কারণে বিঘ্ন হচ্ছে বাঁধ মেরামতের কাজ।

খুলনা জেলা প্রশাসন বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করেছে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সুকুমার কবিরাজ জানান, প্রত্যেকটা নদ-নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার কালীনগর গ্রামের ভদ্রা নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ২২ নম্বর পোল্ডার প্লাবিত হয়েছে। যাতে দ্বিতীয় জোয়ারের ১৩ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ১ হাজার হেক্টর বিঘা জমির জন্য লাগানো আমন বীজতলা নষ্ট হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮-৯ ‘শ বিঘার গলদা চিংড়ী ঘের। নষ্ট হয়েছে তরমুজসহ নানা সৃবব্জি। বিধস্থ হয়েছে কয়েকটা কাঁচা ঘর বাড়ী। জোয়ারে পানি ঢুকছে ও ভাটায় নামছে। প্রতি বছর আমরা ভাঙ্গনের কবলে পড়ে বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। কিন্তু স্থায়ী কোন সমাধান হচ্ছেনা।

দেলুটী ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল জানান, এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। শেষ হতে আরও সময় লাগবে কয়েকদিন।এদিকে খবর পেয়ে পাশ্ববর্তী সোলাদানা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হক, আবারও নিজস্ব শ’ শ’ লোক নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধার কাজ করছেন। সরকারী অর্থায়নে স্থায়ীভাবে টেকসই বাঁধের বিকল্প নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন জানান, আমি ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় গিয়েছি। স্বচক্ষে দেখলাম। বিষটা খুবই কষ্টদায়ক। স্থায়ীভাবে বাঁধ কিভাবে বাঁধা যায় সেব্যাপারে কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ণ কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস, কৃষি কর্মকর্তা অসীম কুমার দাস, পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা রাজু আহম্মেদ হাওলাদারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।

এদিকে গতকাল সারা রাত বৃষ্টি হওয়ায় খুলনা মহানগরীর টুটপাড়া, বয়রা, নিরালা, মৌলভীপাড়া, বায়তি পাড়াসহ অধিকাংশ রাস্তা পানিতে ডুবে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ