শিরোনাম :
চাঁপাইনবাবগঞ্জে আওয়ামী লীগের নাশকতা রুখতে মাঠে ছাত্রশিবির সুনামগঞ্জে ভুয়া ব্যবসায়ী সেজে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রের মূলহোতা সহ গ্রেপ্তার ৬ কুমিল্লা নাশকতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে রাজপথে সমমনা ৮ দলের অবস্থান তৃণমূলের দাবিতে মুখর কুমিল্লা বিএনপি  কুমিল্লায় ডাকাতি প্রস্তুতিকালে আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার কুমিল্লায় মাদক সেবনে বাধা দেয়ায় নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা দিরাই-শাল্লায় আজমল হোসেন চৌধুরী জাবেদের পক্ষে বিএনপির গণমিছিল ও সমাবেশ পঞ্চগড় বিপি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে “Empowered Living” শীর্ষক মোটিভেশনাল আলোচনা সভা শিক্ষক নিয়োগে সুপারিশ থাকলে মানসম্মত শিক্ষক পাবেন না, এতে প্রতিষ্ঠান কলঙ্কিত হবে : আবুল কালাম খিলা আজিজ উল্যাহ উচ্চ বিদ্যায়লয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত
শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন

নড়াইলের নবগঙ্গা নদীর উপর বারইপাড়া সেতুর নকশা জটিলতায় 

Reporter Name / ২৭৪ Time View
Update : শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নড়াইল জেলা প্রতিনিধি : নকশা জটিলতায় ৬৫ কোটি টাকার সেতুতে ব্যয় ১৩৫ কোটি। নড়াইলের কালিয়ায় নবগঙ্গা নদীর উপর বারইপাড়া সেতুর নির্মাণ কাজ দেড় বছরের শেষ হওয়ার কথা থাকলেও দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে সাথে ছয় বছরেও হয়নি শেষ। সেতুর নকশায় জটিলতা ৬৫ কোটি টাকার সেতুর নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাড়িয়েছে প্রায় ১৩৫ কোটি টাকা। সেতু নির্মাণে ধীর গতিতে ভোগান্তে চরমে, পথে চলাচলকারী লোকজন ও এলাকাবাসী। তবে সড়ক বিভাগ বলছে নকশা জটিলতা কাটিয়ে কাজ শুরু হয়েছে, আগামী বছর জুনের মধ্যেই সেতু নির্মাণের বাকি কাজ শেষ হবে। জানা যায়, বছরের পর বছর চলছে সেতু নির্মাণের কাজ, তবে শেষ কবে হবে জানা নেই কারো। নড়াইল সদরের সাথে কালিয়া উপজেলা সহ,বাগেরহাট, খুলনা গোপালগঞ্জের সাথে সড়ক যোগাযোগ সহজিকরনণে সড়ক বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২০১৮ সালে শুরু হয় নবগঙ্গা নদীর উপর কালিয়া বারইপাড়া সেতুর নির্মাণ কাজ। সাড়ে ৬ বছরে ৩ দফায় মেয়াদ বাড়ানো হলেও এখানো শেষ হয়নি সেতু নির্মাণের কাজ। সবশেষে ২০২৩ সালে সময় বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জুন নির্ধারণ করা হয়েছে। নদীর দুই তীরবর্তী অংশের সংযোগ সড়ক সহ ১৮ টি পায়ার এবং ১১ টি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হলে মধ্যবর্তী অংশের ৩ টি স্প্যান বসানোর কাজ এখানো বাকি। নকশা জটিলতা নির্মাণ ব্যয় বেড়ে দাড়িয়েছে প্রায় দ্বিগুন, এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

শুভ দীপ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, নদী পারাপারের অসুবিধের কারণে আমরা স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীরা সময় মত যেতে পারি না। বাবু মিয়া নামের এক স্থানীয় বলেন, সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হইছে কিন্তু শেষ হওয়ার নাম তো দেখছিনা। কাজ শুরুর পর ভাবছিলাম আমাদের দুর্ভোগ কমবে, কিন্তু এখন তো দেখছি দুর্ভোগ আরো বাড়ছে। সেতুর নিচ দিয়ে নৌকা পারাপার হতে গিয়ে নৌকা ডুবিতে যেমন মৃত্যু হচ্ছে পাশাপাশি সম্পদের ও ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে পারাপার হতে হয়।

রাবেয়া নামের এক উদ্যোক্তা বলেন, নদীর পাড়েই আমাদের বাড়ি। প্রতিনিয়ত ই দেখি মালামাল পারাপারের ব্যবসায়ীরা যেমন ভোগান্তিতে পড়ছে অন্যদিকে তাদের পরিবহন খরচ ও বাড়ে। যানবহন পারাপারে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। এটা সরকারের টাকা অপচয়। যখন সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল,কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করে সঠিকভাবে নকশা করলেই করতে পারতো। এখন সেতু নির্মাণে দ্বিগুন অর্থ খরচ হচ্ছে, এটা গো জনগণের টাকা থেকেই করতে হচ্ছে।

সড়ক বিভাগের তথ্য মতে,৬৫১ দশমিক ৮৩ মিটার দীর্ঘ ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থের পিসি গার্ডার সেতুরটির নির্মাণের চুক্তি মূল্য ৬৫ কোটি টাকা থাকলেও দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে সেতুর নকশার জটিলতায় নির্মাণ ব্যয় ঠেকেছে ১৩৫ কোটি টাকায়। সেতু নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জামিল ইকবাল এন্ড মঈনুদ্দিন বাসী কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ২০১৮ সালে ৬৫ কোটি টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন।বাল্কহেডের ধাক্কায় ৯ নং পিলারটি দুই বার নদীগর্ভে হারিয়ে যাওয়ার পর মূল অংশের ৪ টি পায়ার ও ৩ টি স্প্যান বসানোর কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই ৬১ কোটি টাকায় সড়ক বিভাগ কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়ানোর পর প্রথম মেয়াদেরর চুক্তি শেষ করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে। পরে দ্বিতীয় মেয়াদে কংক্রিট এন্ড স্টিল টেকনোলজিস্ট লিমিটেড ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সেতুর বাকি অংশ নির্মাণের চুক্তিবদ্ধ হন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি বিদেশ থেকে আমদানি কৃত ৮৬ দশমিক ৭৩ মিটার স্টিল আর্চ স্প্যান সহ আরো দুইটি স্প্যান এবং বাড়তি পায়ারের পাইলিং এর কাজ শুরু হয়েছে।

নড়াইল জেলা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.নজরুল ইসলাম সেতুর নকশা জটিলতায় দায় বিআইডব্লিটিএ কর্তৃপক্ষের উপর চাপিয়ে বার্তা বাজার কে বলেন, যে কোন নদীর উপর সেতু নির্মাণের বিআইডব্লিটিএ কর্তৃপক্ষ নদীর শ্রেণী বিভাজন করে অনুমতি দিয়ে থাকেন। সড়ক বিভাগ সেতুরযে কোন নদীর উপর সেতু নির্মাণে বিআইডব্লিউটিএ কতৃপক্ষ নদীর শ্রেনী বিভাজন করে অনুমতি দিয়ে থাকেন। সড়ক বিভাগ সেতুর নকশা করার পূর্বে বিআইডব্লিউটিএ কতৃপক্ষ নবগঙ্গা নদীকে সি গ্রেডের নদী হিসাবে আমাদের কাছে প্রতিবেদন পাঠান। তাদের সাথে সমন্বয় করে সকল ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে নকশা অনুমোদনের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরুর আগে নিজেরাও পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই কাজ শুরু করেন।

তিনি আরও বলেন, কাজ শুরুর পরের বছর বাল্কহেডের ধাকায় ৯নং পায়ারটি দুইবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই ঘটনার পর বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ নবগঙ্গা নদীর গ্রোড পরিবর্তন করে বি গ্রেডের নদী হিসেবে প্রতিবেদন পাঠায়। পরবর্তীতে তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী সেতুর নকশা পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে। একনেক সভায় ২০২৩ সালে নকশা পরিবর্তন করে স্টিল স্প্যান বসানোর অনুমোদন হয়। প্রথম ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় দ্বিতীয় মেয়াদে অন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। ২০২৫ সালের জুন, নির্দিষ্ট মেয়াদে সেতুর কাজ শেষ হবে বলে আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা

সম্পাদকীয়

সম্পাদক ও প্রকাশক