মো আব্দুল শহীদ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : দোয়ারাবাজার উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজার মেশিন দিয়ে খালে মাটি ভরাট কাজের পরিকল্পনা হাতে নেয়ায়, হাওরের মাছ উৎপাদন হ্রাস এবং বোরো ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয় মৎস্যজীবী ও কৃষকেরা।
দোয়ারা উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনস্থ দোয়ারা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের পাশের ছোট ব্রিজের খালে এই মাটি ভরাট কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড।
খালে মাটি ভরাটের কাজ বন্ধ করতে নানা সমস্যার কথা উল্লেখ করে গত মঙ্গলবার দোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট আবেদন দিয়েছেন ভুজনা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি ও ইজারাদার মো. আমির আলী।
স্থানীয়রা জানান, ভুজনা ও জিনারী মৌজার অন্তর্গত শান্তিপুরে ছোট ব্রিজের খালে মাটি ভরাট হলে পার্শ্ববর্তী কনসখাই বিল, কুর বিল, পাতিলাউরি বিল, মরাগাং জলমহালসহ অন্যান্য ডোবা নালায় মাছের উৎপাদন হ্রাস পাবে এবং বিলের অভয়াশ্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একই সাথে হাওরের বোরো ফসল উৎপাদন ব্যাহত হবে। সর্বোপরি সরকারী রাজস্বের আওতায় জলমহালের মারাত্মক ক্ষতি হবে।
অপরদিকে, বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে এবং বর্ষায় ঢলের পানি নিষ্কাশন বাধার সম্মুখিন হবে।
শুক্রবার সরেজমিনে গেলে শরীফপুর গ্রামের মৎস্যজীবী মিজানুর রহমান, সুরুজ মিয়া, লাল মিয়া, রাকাব মিয়া, ফজলুল করিম, জুনায়েদ আহমদ, কাঁচা মিয়া, সবুজ মিয়া, ইদ্রিছ আলী, রজব আলী, রেহেন উদ্দিন, পূর্ব মাছিমপুর গ্রামের মৎস্যজীবী মো. মইন উদ্দিন, রায়নগর গ্রামের আজি রহমান, শান্তিপুর গ্রামের কৃষক জসীম উদ্দিন, জামাল মিয়া, জলিল মিয়া, আবুল হোসেন, আবুল কাশেম, আরাফাত আলী, জয়নাল আবেদীনসহ আরও অনেকে খাল ভরাটের ফলে নানা সমস্যার কথা সাংবাদিকদের জানান।
এ সময় তারা আরও জানান, এখানকার হাওর-বিলে মাছ উৎপাদন করে এবং কৃষি জমিতে ফসল ফলিয়ে হাজারো
পরিবার জীবীকা নির্বাহ করে থাকেন। খালে মাটি ভরাট করা হলে এই এলাকার মানুষের যেমন ক্ষতি হবে, তেমনি সরকারী রাজস্বের হাওর-বিলও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হাজার হাজার একর জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। কর্মজীবী মানুষগুলো বেকার হয়ে পড়বে। দেখা দেবে দরিদ্রতা।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ ইমদাদ হোসেন বলেন, ভুজনা ও জিনারী মৌজায় ছোট ব্রিজের এলাকায় খাল ভরাট করা হবে। এখানে সরকারী রাজস্বের আওতায় কোনো বিল বা হাওর নেই।
দোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহের নিগার তনু বলেন, আমার কাছে স্থানীয়রা এসে অভিযোগ দিয়েছেন। তা তদন্ত করে দেখা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনও বলেন, এখানকার একমাত্র কুরবিল লীজ হয়েছে। খাল ভরাট হলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে বা মৎস্য, কৃষির ক্ষতি হবে, না হবে না এই বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ভাল করে চিন্তা করে উদ্যোগ নিয়েছে।
Leave a Reply