মো আব্দুল শহীদ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের ফলের বাজার স্থান পরিবর্তনের কারণে ক্রেতা শূণ্য হয়ে পড়েছে নতুন ফলের বাজার। গত প্রায় তিন মাস আগে সুনামগঞ্জ জেলা স্টেডিয়ামের দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্বে এই ফল বাজার স্থানান্তর হয়। এরপর থেকে প্রতিনিয়ত বাজার ক্রেতা শূন্য থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
একাধিক ব্যবসায়ী জানান, তাদের সাংসারিক খরচ, সন্তানের লেখাপড়ার খরচ, ওষুধ খরচ সহ জীবনজীবীকার সার্বিক খরচ যোগান দেয়া এক মানবেতর জীবন যাপনে পতিত হয়েছেন। পঁচনশীল এই ফলজ ব্যবসায় ফল বিক্রি না হওয়ায় প্রতিনিয়ত আঙ্গুর, আপেল, কমলা, মালটা, ডালিম, ড্রাগন প্রভৃতি ফল পঁচন ধরছে এবং ডাস্টবিনে ফেলতে হচ্ছে। এতে প্রতি ব্যবসায়ী লোকসানের বুজা বড় হচ্ছে। পরিবারে চাহিদা মেটানো এখন অসম্ভব হয়ে পড়েছে তাদের। এহেন অবস্থায় পরিবারের লোকজন দিবারাত্রি মানসিক দুশ্চিন্তায় বিপর্যস্থ হচ্ছেন। প্রতিদিন সাংসারিক খরচ যোগান দিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকানে ঋণের খাতা ভারী হচ্ছে। ঋণ পরিশোধের তাগদায় যাতায়াত রাস্তা ছেড়ে বিকল্প পথে চলতে হচ্ছে। এমন দুর্বিষহ এবং আবেগপ্রবণ কাহিনী শুনতে হয়েছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফল বাজারের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের।
অপরদিকে, ফলের খুচরা ক্রেতা সাধারণ পুরাতন বাজার ফলের দোকান না পেয়ে বাসায় খালি হাতে ফিরছেন। অনেকে জানেন না যে ফলের দোকানগুলো অন্যত্র স্থানান্তর হয়েছে। এই শীত মওসুমে নতুন নতুন ফল বাজারে আসবে এবং ক্রেতাদের হাতে পৌঁছবে। কিন্তু এখন ফলের বাজারে ক্রেতা না থাকায় খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি ফল দোকানে আনতে সাহস পাচ্ছেন না। কারণ বিক্রি নাই, তাই ফল পঁচে বেশি।
ফলের খুচরা ক্রেতা আব্দুল করিম বলেন, আমার সন্তানদের জন্য ফল নিতে দোকান খুঁজে পাইনি বেশ কয়েক দিন ধরে। সবজির দোকানে ফল বিক্রি হওয়ায় আমি জিজ্ঞেস করলাম ফলের কই। সে বলে এইতো। আরও দোকান কই। সে বলে যা লাগে আমার কাছ থেকে নিয়ে যান। পরে নিয়ে কী করবো কমলা ও আপেল কিনে নিলাম।
অপর ক্রেতা সাজাউল হক বলেন, লোক সমাগম স্থানে ফলের বাজার হলে সবার জন্য ভাল। এখন যে জায়গায় নেওয়া হয়েছে, এটা চলাচলের মেইন রাস্তা নয়।
ফলের ব্যবসায়ী আব্দুর রউফ বলেন, এই ফলের ব্যবসা করলাম সারা জীবন। এখন বাদ দেওয়ার চিন্তা করছি। প্রায় তিন মাসে লস হয়েছে হাজার হাজার টাকা। আবার ঋণও হয়েছি লক্ষ টাকা। এখন এই ব্যবসায় পরিবারের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। সন্তানের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
ক্রেতা ও বিক্রেতারা ফলের ব্যবসায়ীদের কল্যাণে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন।
Leave a Reply