মোঃ মনিরুল ইসলাম, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : বরগুনার আমতলী উপজেলার উত্তর পূর্ব তক্তাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামাজ পড়ার স্থানে সংসার পেতেছেন প্রধান শিক্ষক দম্পতি শাজাহান তালুকদার ও তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা তাছলিমা আক্তারের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আমতলী উপজেলার উত্তর পূর্ব তক্তাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০০৩ সালে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান মোঃ শাহজাহান তালুকদার এবং একই বিদ্যালয়ে তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা পদে চাকরি করছেন তাছলিমা আক্তার। প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর থেকে শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, টাকা আদায়, সেচ্ছাচারিতা, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোসহ নানা অনিয়ম- দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে।
এসব অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক দম্পতির পদত্যাগের দাবিও করছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষিকা বলেন, প্রধান শিক্ষক শাজাহান তালুকদার ২০০৩ সালে বিদ্যালয়ে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা এবং লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আসছে। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে কোন নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে শিক্ষক দম্পতি বিদ্যালয়ের স্টোর রুমের পাশে নামাজের স্থানে হাড়ি পাতিল, গ্যাসের চুলা, বিছানা বিছিয়ে নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করে সংসার পেতে বসেছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নস্ট করছেন।
তিনি আরও জানান, প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষকসহ সিন্ডিকেট করে নানা অনিয়ম দুর্নীতি শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরিক্ষার ফি আদায়, ভুয়া বিল করে টাকা আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি শুরু করেন।
এমনকি বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান তলানিতে গিয়ে ঠেকলে ছাত্রছাত্রী ও এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহজাহান তালুকদার দম্পতির পদত্যাগসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছিলো।
কিন্তু তৎকালীন সরকারের ক্ষমতাধর জনপ্রতিনিধির ছত্রছায়ায় প্রধান শিক্ষক নির্বিঘ্নে নিজের অপকর্ম চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়।
শিক্ষার্থীরা বলেন- প্রধান শিক্ষক কখনো শ্রেণি কক্ষে পাঠদান করতেন না। এমনকি এসব অনিয়ম নিয়ে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে উল্টো রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে হুমকি-ধমকি ও নানাভাবে হয়রানি করা হতো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মোঃ শাজাহান তালুকদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,তেমন কিছুনা এখানে দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় মাঝে মধ্যে তরকারি গরম করা হয়।
প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা তাছলিমা আক্তার বলেন,এখানে স্থায়ীভাবে থাকা হয় না, বাচ্চাদের খাবার খাওয়ানো হয়।
আমতলী উপজেলা শিক্ষা অফিসার শফিউল আলম বলেন, দুপুরে খাবার তৈরি করা হয়,চুলা হারি পাতিল এটা প্রায় স্কুলে রয়েছে। এটা স্থায়ী না।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মাদ আশরাফুল আলম বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply