মোহাম্মদ শাহাদাত আলম অন্তর : গভীর ভাবগাম্ভিজর মধ্যদিয়ে দৈনিক ময়নামতি পত্রিকার সস্পাদক ও প্রকাশক বীর মুক্তিযৌদ্ধা অধ্যক্ষ আফজল খান এডভোকেট এর তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়েছে।
আজ শনিবার ১৬ নভেম্বর প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মরহুমের সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পন ও পবিত্র কোরআন খতম, কবর জিয়ারত করা হয়। বেলা ১২ টায় নগরীর মর্ডাণ কমিউনিটি সেন্টারে দোয়া ও মিলাদ-মাহফিল ও কাঙ্গালী ভোজের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা, সাবেক সংসদ ও হুইপ মনিরুল হক চৌধুরী, জামায়েত ইসলামি বাংলাদেশ, কুমিল্লা মহানগর শাখার আমীর কাজী দীন মোহাম্মদ, বিভিন্ন রাজনৈতিক,সামাজিক সাংস্কৃতিক সাহিত্যিক , ও সাংবাদিক, ডাক্তার, পরিবেশ বান্দব নেতৃবৃন্দু এবং মরহুমের ভক্ত শিক্ষক-শিকিক্ষা, অভিভাবক, হাজার হাজার শুভাক্ষাংকী, শুভানুধ্যায়ী উপস্থিত ছিলেন।
তৃতীয় মৃত্যু বার্ষিকী ও দোয়া, মিলাদ-মাহফিলে মুনাজাত পরিচালনা করেন ঠাকুরপাড়া বড় মসজিদের খতিব হযরত মাওলানা হাবিবুর রহমান আল- ফরিদী। দুপুর ১টা থেকে মাগরিব পর্যন্ত উপস্থিত সকলকে আপ্পায়ন করা হয়। মুনাজাতের পুর্বে মরহুমের একমাত্র কন্যা সাবেক সংসদ আঞ্জুম সুলতানা সীমা ও পুত্র ডাক্তার আজম খান নোমান বাবার আত্নার মাগফেরাত ও বাবার অসমাপ্ত কাজগুলি সমাপ্তসহ কুমিল্লাবাসীর ভালবাসা নিয়ে রাজনিতি করতে পারে সে জন্য সকলের নিকট দোয়া কামনা করেন।
বৃহত্তর কুমিল্লার গণমানুষের নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবক, রাজপথের লড়াকু সৈনিক, সমবায়ী, সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের আপনজন, জেলা ১৪ দলের সাবেক আহবায়ক, সাবেক কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত অধ্যক্ষ আফজল খান এডভোকেট। মহান এই নেতা জীবদ্দশায় ১৭ টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি, স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম নির্বাচিত কুমিল্লা পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সমবায় ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির পরিচালক, আদর্শ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, কুমিল্লা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি, কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি, জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড ঢাকার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা জেলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি’র ভাইস চেয়ারম্যান, কুমিল্লা রাইফেলস্ ক্লাব’র সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পরিচালনা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
এছাড়াও তিনি সার্ক চেম্বারের প্রতিনিধি হিসেবে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিভিন্ন সেমিনার, এফবিসিসিআই’র প্রতিনিধি হিসেবে ১৯৮৮ সালে জেদ্দায় ইসলামী চেম্বারের আন্তর্জাতিক সন্মেলন, সমবায় প্রতিনিধি হিসেবে ১৯৯৪ সালে জাপানে আন্তর্জাতিক সমবায় সন্মেলন ও এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন শিল্প ও বানিজ্য মেলায় অংশগ্রহণ করেন। তাছাড়া এই প্রয়াত নেতা সমবায় আন্দোলনে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক শ্রেষ্ঠ সমবায়ী হিসেবে স্বর্ণ পদক, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জাতীয় বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক স্বর্ণ পদক লাভ করেন।
ছাত্র জীবনে ১৯৬৫-’৬৬ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ’র ভিপি, ৬০’র দশকে জেলা ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৬ দফা’ ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান,’৭০’র নির্বাচনে বৃহত্তর কুমিল্লায় সক্রিয় নেতৃত্ব দানসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক কর্মকান্ডে মৃত্যুর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন।
অধ্যক্ষ আফজল খান শুধুমাত্র একেটি ব্যাক্তি বিশেষ নহে,একটি আদর্শ। এ আদর্শকে বুকে ধারণ করে সবাই জাতিগঠনে মনোনিবেশ করলে জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি অবশ্যই অর্জিত হবে। উল্লেখ্য ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
Leave a Reply