আজ ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

যে কোনোদিন স্বাস্থ্যখাত নিয়ে পড়াশোনা করেনি তার সচিব হওয়া কি যৌক্তিক?

নিজস্ব প্রতিনিধি : জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন কর্তৃক প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য ক্যাডার বিলুপ্তি সংক্রান্ত সুপারিশ প্রত্যাখ্যান ও উপসচিব পদে সকল ধরনের কোটা বাতিলের দাবিতে বিসিএস হেলথ ক্যাডারের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত।

আজ সোমবার বিকেল ৩ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আব্দুস সালাম হলে বিসিএস হেলথ ক্যাডার এ্যাসোসিয়েশনের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ও বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারকে, ক্যাডার কাঠামোর বাইরে রাখার সুপারিশ করতে যাচ্ছে। বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের ৩৫ হাজার সদস্যের মুখপাত্র “বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন” এ ধরনের একতরফা সংস্কার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে।

আমরা দেশবাসীর সামনে প্রশ্ন রাখতে চাই, স্বাস্থ্যের নীতিনির্ধারনী পদসমূহে একজন সরকারি চিকিৎসক সচিব হিসেবে বেশি যৌক্তিক, নাকি যে কোনোদিন স্বাস্থ্যখাত নিয়ে পড়াশোনা করেনি তার সচিব হওয়া বেশি যৌক্তিক? নিশ্চই একজন সরকারি চিকিৎসক স্বাস্থ্য খাত সম্পর্কে অনেক বেশি জানবেন। অথচ স্বাস্থ্যের নীতিনির্ধারনী পদসমূহে কোনো সরকারি ডাক্তার নেই। আমরা প্রশ্ন করতে চাই, কিভাবে একজন অচিকিৎসক আপনাদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে পারেন? কিভাবে সচিবালয়ের নীতিনির্ধারনী পদসমূহে চিকিৎসক না রেখে স্বাস্থ্য সংস্কারের প্রস্তাব দেয়া হতে পারে? এটা কি যৌক্তিক?

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, বিগত সময়কালে সচিবালয়ে অচিকিৎসক কর্মকর্তাগণ স্বাস্থ্যকে স্বাস্থ্যকে বিজ্ঞানভিত্তিক ও যুগপোযোগী না করে বরং উল্টো পথে হেঁটে আমলাতান্ত্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কায়েম করেছে। যার ফলে স্বাস্থ্য খাত আজও কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি এবং জনস্বার্থমুখী স্বাস্থ্য খাত না হয়ে মন্ত্রী ও আমলামুদী পুঁজিবাদী ও স্বার্থবাদী স্বাস্থ্য খাত সৃষ্টি হয়েছে। আমরা মনে করি, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বশীল ও নীতিনির্ধারনী পদসমূহে মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন স্বাস্থ্য ক্যাডারের দক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন করে প্রকৃত বিজ্ঞানভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব।

সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রকৃত সংস্কার প্রস্তাবনা বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যকে ক্যাডার বহির্ভূত করার যে হঠকারি সুপারিশ করেছেন, তা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেধাবৃত্তিক জনপ্রশাসন তৈরি ও বৈষম্য বিরোধী মূল চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। এই সুপারিশ প্রত্যাহার করা না হলে প্রশাসনিক সংস্কার ব্যর্থ হবে। সংস্কার কমিশন কর্তৃক বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের প্রতিনিধিদের সাথে কোনরূপ আলোচনা ব্যতীত এমন প্রস্তাবনা তৈরি এবং গণমাধ্যমে এক তরফা ভাবে প্রচার করা সুবিবেচনা প্রসূত নয়। এতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত দক্ষতার সুস্পষ্ট ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে। এরূপ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও জনগণের প্রান্তিক পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিতে পারে। উদ্ধৃত যেকোনো ধরনের নেতিবাচক পরিস্থিতির কোনোরূপ দায়ভার বিসিএস হেলথ ক্যাডার এসোসিয়েশন বহন করবে না। আমরা সংস্কার কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানাই, তবে দূরভিসন্ধিমূলক সুপারিশকে সংস্কার প্রস্তাব হিসেবে মানা হবে না।

দেশের প্রত্যন্ত ইউনিয়ন থেকে রাজধানী পর্যন্ত বাংলাদেশের বৃহত্তম চিকিৎসা প্রদানকারী ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বপালনকারী গ্রুপ বিসিএস হেলথ ক্যাডারের অফিসারগন। আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে জানাতে চাই, হেলথ ক্যাডারের সাথে আলোচনা ব্যতিত কোনোরূপ সংস্কার প্রস্তাব মেনে নেয়া হবে না।

 

সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত দাবীগুলি-

১। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সকল পর্যায়ের নীতি নির্ধারনী পদে স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তা পদায়িত হতে হবে।

২। উপসচিব পুলে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করতে হবে।

আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ডাঃ মোঃ নিয়ামত হোসাইন, ডাঃ উম্মে তানিয়া নাসরিন, ডাঃ মফিজুর রহমান, ডাঃ তৌফিক আহমেদ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ