আজ ২৭শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সুনামগঞ্জে বালু মহালে লুটপাটে ব‍্যবস্থা নেয়া হবে-সিলেট বিভাগীয় কমিশনার

মো আব্দুল শহীদ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন নদীতে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধে অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব‍্য রাখেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী (এনডিসি)।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব‍্য রাখেন পুলিশ সুপার আ.ফ.ম আনোয়ার হোসেন খান পিপিএম, ৬১ ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট, অধিনায়ক মেজর মহিউদ্দিন ফারুকী, ২৮ বর্ডার গার্ড ব‍্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্ণেল একেএম জাকারিয়া কবির।

এ ছাড়াও বক্তব‍্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বেলা’র অ‍্যাড. শাহেদা খাতুন, সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি একে আবু নাসের, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সাইফুল আলম সদরুল, শিক্ষক হাবিবুর রহমান, অ‍্যাড. শেরেনুর আলী, দৈনিক সুনামগঞ্জের খবরের সম্পাদক পংকজ দে, সুনামগঞ্জের ডাকের সম্পাদক শেরগুল আহমদ, জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলাম অলি, সাংবাদিক লতিফুর রহমান রাজু, কেন্দ্রীয় ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল গালিব, আবু সালেহ মোহাম্মদ মাহিন, উছমান গণী, জিহান জুবায়ের, বালু শ্রমিক আব্দুর রশীদ, নাসির মিয়া, সাহেদ মিয়া, পরিবেশকর্মী শওকত আলী প্রমূখ।

মতবিনিময় সভার শুরুতে ধোপাজান চলতি নদী বিষয়ে তথ‍্য ও স্থিরচিত্র উপস্থাপন করেন এবং স্বাগত বক্তব‍্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি।

মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল।

সভায় বক্তারা বলেন, পুলিশের সদিচ্ছা থাকলে অবৈধভাবে বালু-পাথর লুট বন্ধ করতে পারতো। কিন্তু তারাও এসব লুটপাটে যুক্ত ছিল। প্রতিদিন ৪০-৫০ টি নৌকা আটক করতো এবং একটি নৌকা ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে ছেড়েও দিতো। এভাবে ৫ আগষ্টের পর থেকে বেশি পরিমাণে লুটপাট হয়েছিল। এসব লুটপাটে সাংবাদিক নামধারী কিছু লোক জড়িত ছিল। বালু ও পাথরের ব‍্যবসায়ীরা সংঘদ্ধ হয়ে পুলিশ, ডিবি ও অসাধু সাংবাদিক নিয়ে এই অবৈধ কাজ করতো।

তারা বলেন, লুটপাট বন্ধ করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনে আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি। লুটপাট চলমান ছিল।

বক্তারা বলেন, এখনও সুনামগঞ্জে কিছু কর্মকর্তা বিগত ফ‍্যাসিবাদী সরকারের হয়ে কাজ করছেন। যার কারণে সুনামগঞ্জের যাদুকাটা ও ধোপাজান চলতি নদীতে বালু-পাথর প্রায় দেড়শত কোটি টাকার লুটপাট হয়েছে।

আজ এই মতবিনিময় সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

এ সময় সভায় আগত একাধিক ব‍্যক্তি জানান, সদর থানার পুলিশ ও ডিবি পুলিশের কর্মকর্তারা প্রতিদিন অন্তত শতাধিক নৌকা ধরা ও ছাড়ার মহৌৎসবে মেতে উঠেছিলেন দীর্ঘ তিন মাস যাবত। তারা কিছু নামধারী সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে চলতেন। সন্ধ‍্যারাতেই তারা চলে যেতেন ধোপাজান চলতি নদীতে। পুলিশ কর্মকর্তারা রাত ১০টায় ফিরে শহরের বিভিন্ন বিকাশের দোকানে লক্ষ লক্ষ টাকা নিজের এলাকায় পাঠিয়ে দিতেন। অসাদু নামধারী সাংবাদিকেরা থাকতেন সারারাত।

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব‍্য রাখেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকী (এনডিসি) বলেন, যারা জাতির সম্পদ লুটপাট করছে, তাদের বিরুদ্ধে এক সাথে লড়তে হবে। এরা শক্তিশালী, হিংস্র ও ভয়ংকর। বালু ও পাথর খেকোদের বিরুদ্ধে ব‍্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ