আজ ১৭ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আট দফা দাবিতে মশাল মিছিল

ইনসাফ ডেস্ক : চলমান সহিংসতা, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক অভিযোগ ও চাকুরীচ্যুত, ধর্মীয় কূটক্তির অজুহাতে খুলনায় পিটিয়ে হত্যার চেষ্টার প্রতিবাদ ৮ দফা দাবীতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মশাল মিছিল

আজ শুক্রবার বিকেল ৫ টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর চলমান সহিংসতা অগ্নিসংযোগ, চাঁদাবাজি, অপহরণ, জোরপূর্বক শিক্ষকদের পদত্যাগ ও লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে, কর্মস্থানে হয়রানি বন্ধ ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পূর্ব ঘোষিত ৮ দফা দাবী বাস্তবায়নে সনাতন অধিকার মঞ্চ (এসআরএম)-এর উপদেষ্টা অধ্যাপক অশোক তরু মহোদয়ের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (ইঝচ)- এর সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সুমন কুমার রায়, উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন উক্ত সংগঠনের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি দিপঙ্কর শিকদার দিপু, শারদাঞ্জলী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি রতন চন্দ্র পাল,অ্যাডভোকেট প্রহলাদ সাহা, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মানিক চন্দ্র, ব্রাহ্মণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কৃষ্ণ ভট্টচার্য্য, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি অনুপ কুমার দত্ত ও মুখপাত্র সাজন কুমার মিশ্র, ভক্ত সংঘ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির শান্তি রঞ্জন মন্ডল, কবি ও সাংবাদিক অশোক ধর, হিন্দু কল্যান ফাইন্ডেশন রবীন্দ্রনাথ বর্মন, বিশ্ব হিন্দু ফেডারশনের বরুন চন্দ্র সরকার, ভক্তসংঘ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অনীল পাল, বিশিষ্ট আইনজীবী এডভাকেট জিতেন্দ্র বর্মন, সচেতন হিন্দু পরিষদের সভাপতি এডভোকেট প্রভাস তন্ত্রী, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি) এর সহ-সভাপতি চিকিৎসক বাসু দেব রায় চন্দন, সনাতন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের মোহন সরকার, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দুলাল সরকার, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক মিঠু সাহা,প্রকৌশলী উত্তম দাস,স্বপ্ন কুমার শিপু, সবুজ বৈরাগী, বিকাশ অধিকারী,অমিত বর্মন, গোপাল দাস, শ্যামল দস,প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ।

বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত সভাপতি দীপংকর শিকদার দীপু বলেন, উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশে চলমান সহিংসতা বন্ধ,সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক অভিযোগ ও চাকুরীচ্যুত, ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে প্রশাসনের সম্মুখে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা, জোরপূর্বক শিক্ষকদের পদত্যাগ ও লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে, কর্মস্থানে হয়রানি বন্ধ ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পূর্ব ঘোষিত ৮ দফা দাবী বাস্তবায়নে বর্তমান অর্ন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর প্রতি সুদৃষ্টি আকর্ষন করেন।

অত্র সংগঠনের সার্বিক তত্বাধায়ক ও বাংলাদেশ সনাতন পার্টি এবং বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুমন রায় বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত আন্দোলন করছি, সরকার আসে সরকার যায় কিন্তু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয় না, দেশ আজ সাম্প্রদায়িকতার পরপূর্ন, দিন- দুপুরে প্রকাশ্যে প্রশাসনের সামনে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে,শিক্ষকদের গলায় জুতোর মালা পড়ানো হচ্ছে,গাছে বেঁধে পটানো হচ্ছে, প্রতিনিয়ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে, দেশ আজ হীরকরাজার দেশে পরিপূর্ণ হয়েছে,গুজব, বিদ্বেষ ও প্রতিহিংসা আজ এ দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ।

এডভোকেট প্রহলাদ সাহা বলেন, আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী আমাদের অধিকার চাই। অনতিবিলম্বে ৮ দফা দাবিসহ উপরিউক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে সনাতনী সম্প্রদায়ের যৌক্তিক দাবি পুরণ করা না দল-মত নির্বিশেষে অধিকার আদায়ে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ ঘোষনা করা হবে।

ভক্তসংঘ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শান্তি রঞ্জন মন্ডল বলেন, দু:খের সাথে আমরা লক্ষ্য করছি বিভিন্ন শিক্ষকদের নিকট চাঁদা দাবী করা হচ্ছে। চাঁদা না দিলে তাকে জোরপূর্বক পদত্যাগ ও লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। এটা সভ্যসমাজে কখনও কাম্য হতে পারে না।

সাজন কুমার মিশ্র বলেন- সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে গনহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। যা গণমাধ্যমকে কন্ঠরোধ করার শামিল। অনতিবিলম্বে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আনীত হয়রানিমূলক অভিযোগ প্রত্যাহার করার জোর দাবী জানায়।

দিপংকর শিকদার দীপু-দিন- দুপুর প্রকাশ্যে প্রশাসনের সামনে ধর্মীয় কটুক্তির অজুহাতে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে, দেশে আইনের শাসন কোথায়, দেশ আজ অরজকতায় পরিপূর্ণ, দেশে আজ আইন-শৃঙ্খলা নাই, মানুষের কোন নিরাপত্তা নাই। দেশ আজ সম্পূর্ণ অরক্ষিত।তিনি অনতিবিলম্বে দেশের মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ।

ভক্তসংঘ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অনিল পাল বলেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি কিশোরী স্বর্ণা দাস নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক অশোক তরু মহোদয় বলেন- আমরা জাতি হিসেবে খুবই হতভাগ্য ও অভিশপ্ত এবং জন্মই আমাদের আজন্মের পাপ।প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম আমরা জ্বলছি।আর কত রক্ত আর কত অশ্রুর বিনিময়ে আমরা নিরাপত্তার সাথে এ দেশে বসবাস করতে পারবো এটা জাতির বিবেকের কাছে আমার প্রশ্ন রইল, আপনারা একসাথে এই রক্ত ও অশ্রু দিতে আমরা প্রস্তুত। কারন আমাদের আগামী প্রজন্মকে এই নরককুন্ডে রেখে যেতে চাই না। আমরা আগামী প্রজন্মকে আমাদের রক্তের বিনিময়ে তাদের সুরক্ষিত রাখতে চাই।

পরিশেষে বক্তাগন উপরিউক্ত দাবীগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনুস মহোদয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সকল বৈষময় দূর করে একজন বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সকলের জন্য সমঅধিকার প্রপ্তির জোর দাবী জানায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ