৩রা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| ১৮ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২৩শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি| রাত ১০:১৪| বর্ষাকাল|
শিরোনাম:
তেঁতুলিয়ায় প্রকৌশলীর দপ্তরে কাজ শেষ না হতেই কোটি টাকার বিল পাশ পঞ্চগড় জেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি রাশেদ, সেক্রেটারি মুহিব নির্বাচন পেছাতে ‘সংস্কার বিচারের’ নামে ষড়যন্ত্র চলছে : আমিনুল হক মধ্যনগরে টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে পিংকনের  মধ্যনগরে ৫২০ গ্ৰাম গাঁজাসহ গ্ৰেফতার ১ জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে কুমিল্লায় বর্ণাঢ্য প্রতীকী ম্যারাথন অডিটোরিয়াম, জিমনেশিয়াম ও স্টেডিয়াম নির্মাণের দাবি মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আমাদের টার্গেট হচ্ছে এক কোটি সমর্থক বাড়াবো- রুহুল কবীর রিজভী গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল ইবি নিউজ এর প্রকাশক মোঃ মাসুম সরদার এর ৪২ তম জন্মদিন

আপেল মাহমুদকে আবার প্রমাণ করতে হলো তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা

Reporter Name
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, জুন ৩, ২০২৫,
  • 206 বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে

মোঃ ইয়াছিন মিয়া, কুমিল্লা প্রতিনিধি : ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস ও অনুপ্রেরণাদায়ী গানটির গীতিকার এবং গায়ক আপেল মাহমুদ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের শুনানি শেষে জানালেন, ‘আমি যে আপেল মাহমুদ তা জীবিত থেকেই প্রমাণ করেছি। আমি মুক্তিযোদ্ধা নই সেই অভিযোগটি ভুল প্রমাণিত হওয়ায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল -জামুকার সদস্যরা দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’

৫ ই আগস্টের পর স্বাধীন বাংলা বেতার কর্মী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন গীতিকার আপেল মাহমুদের বিরুদ্ধে তিনি মুক্তিযোদ্ধার নন বলে অভিযোগ করেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ১২ মে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের উপ-পরিচালক (উন্নয়ন) ফাতেমা খাতুন আপেল মাহমুদ এর স্বপক্ষে যাবতীয় দলিল ও স্বাক্ষ্য উপস্থাপনের জন্য নোটিশ জারি করেন। ২ মে কুমিল্লা সার্কিট হাউজে শুনানির জন্য আপেল মাহমুদকে ডাকা হয়।

সোমবার সার্কিট হাউজে শুনানি শেষে জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন জানান গীতিকার আপেল মাহমুদ নিজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণ করতে পেরেছেন।

শুনানি শেষে আপেল মাহমুদ আরো বলেন, তিন নম্বর সেক্টরে আমি সরাসরি যোদ্ধা। ক্যাপ্টেন মতিউর রহমানের কমান্ডে যুদ্ধ করেছি। ১০ই এপ্রিল পর্যন্ত আমরা নরসিংদীর পাঁচদোনা সহ বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধ করেছি। নরসিংদী ফল করে ১০ তারিখে। আমরা চলে যাই ক্যাপ্টেন নাসিমের আন্ডারে আশুগঞ্জে। সেখানে আমরা ভৈরব রামনগর ব্রিজে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করি। সেখান থেকে রামনগর ব্রিজ, ভৈরব, আশুগঞ্জ, হবিগঞ্জ, চুনারুঘাট, চানপুর টি স্টেট, তেলিয়াপাড়া টি স্টেটে যুদ্ধ করেছে। তেলিয়াপাড়া ১৯৭১ সালে আমার শেষ যুদ্ধ ক্ষেত্র ছিল।

আপেল মাহমুদ বলেন, ‘আশুগঞ্জের যুদ্ধের সময় আমার বামপাশের চোখের পাশে আঘাতপ্রাপ্তও হয়। পরে আমাকে আগরতলা নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার ভাইও আসেন। ২৫ শে মে কলকাতায় বড় করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হল কলকাতায়। শুরুতেই আমাকে এবং জব্বার ভাইকে শরনার্থীদের জন্য একটি অনুষ্ঠান করতে হয়েছে। আমরা সেদিন দুইদিন অনুষ্ঠান করে অনেকগুলো শিল্পী পাই। পহেলা জুন থেকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে আমার উপর যে দায়িত্ব ছিল তা ২০০৬ এ রিটায়ারমেন্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ বেতার বা রেডিও বাংলাদেশ যাই বলেন না কেন সেই দায়িত্ব পালন করেছি। আমি তো মনোয়ার হোসেনের কোন ক্ষতি করিনি -জানিনা তিনি কেন এমন করলেন। ‘

এ সময় তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন আপেল মাহমুদ এর সহধর্মিনী নাসরিন মাহমুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা একুশে পদকপ্রাপ্ত শব্দ সৈনিক মনোরঞ্জন ঘোষাল, বাংলাদেশ বেতারের সাবেক পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা আশরাফুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর হায়াত খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ সাহাসহ অন্যান্যরা।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহা পরিচালক শাহিনা খাতুন জানান, ৫ ই আগস্টের পরে কুমিল্লা জেলা থেকে ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধা নন এমন অভিযোগ ওঠে। সেই সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে কুমিল্লা সার্কিট হাউসে দুইটি কমিটিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আপেল মাহমুদ প্রমাণ করেছেন তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা।

তিনি আরো বলেন, আপেল মাহমুদ যদি শুধু গান গেয়ে উদ্বুদ্ধ করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকতেন তাহলে তিনি সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে খেতাব পেতেন। কিন্তু তিনি কাগজে পত্রে প্রমাণ করেছেন তিনি সম্মুখ যোদ্ধাও ছিলেন। তাই তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা বিষয়টি নিশ্চিত।

আপেল মাহমুদ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হতে প্রচারিত “মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি” গানের গায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। এ ছাড়াও “তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর” তার একটি উল্লেখযোগ্য গান। দেশাত্ববোধক গান ছাড়াও তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত, লালনগীতি, গণসঙ্গীত ও আধুনিক ধারার গান গেয়েছেন। সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি ২০০৫ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদকে ভূষিত হন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ