মোহাম্মদ শাহাদাত আলম অন্তর : দীর্ঘ ৬০ বছরেও উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরীতে। দীর্ঘদিনের নানা সমস্যায় জর্জরিত কুমিল্লায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) বা কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরীর কার্যক্রম চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। এখানকার রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজবাবস্থা অত্যন্ত নাজুক। সামান্য বৃষ্টি হলেই সেখানকার রাস্তাগুদের পানিতে তলিয়ে যায়। শিল্প ইউনিটেও পানি প্রবেশ করে।
অধিকাংশ সড়ক ভাঙাচোরা ও খানাখন্দে ভরপুর থাকে। এতে কারখানার মালিক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত ড্রেনেজব্যবস্থা না থাকায় নানা সংকটে এ শিল্পনগরী। বিসিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬০ সালে নগরীর অশোকতলা এলাকার ৫৪ দশমিক ৩৫ একর জায়গা নিয়ে ‘কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরী গড়ে উঠে। এখানে ১৪২টি শিল্প প্লটের মধ্যে আটা, অটোরাইস, মুড়ি, ময়দা, বিস্কুট, মিষ্টি, চানাচুর, সরিষা, ওষুধ, জাল, ক্যাবল, সূতা, অ্যালুমিনিয়ামের পাতিল তৈরিসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের ১৩১টি কারখানা চালু আছে।
এ সব কারখানায় প্রায় সাত হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। এখানে বছরে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার পণ্য উৎপাদিত হয় এবং এবং সরকারের তাজছ আসে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। বিসিকের বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী প্রতিদিন শত শত পণ্যবাহী ট্রাক, লরি ও কাভার্ড ভ্যানে করে কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও দেশের অন্যান্য জেলায় নিয়ে যাওয়া হয়।
বিসিকের শিল্প মালিকরা বলেন, সড়ক ও ড্রনেজ সমস্যা প্রকট আকার ধারন করেছে। সামান্য বৃষ্টি হলে সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। পানি বেড়ে শিল্পকারখানার ভেতর ঢুকে যায়। অধিকাংশ পাকা সড়কের পিচঢালই ওঠে কাঁচা সড়কে পরিণত হয়েছে। গর্ত ও ড্রেনে ময়লা-আবর্জনা জমে আছে। কুমিল্লা ফ্লাওয়ার মিলসের কর্মকর্তা সৈয়দ গোলাম কাদের জানান, অধিকাংশ সড়ক এখন চলাচলের অনুপযোগী, হেঁটেও চলাচল করতে কষ্ট হয়। মালামাল নিতে আসা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের চালকেরা ভোগান্তিতে পড়েন।
সড়কের গর্তে পড়ে যানবাহন অটিকে যায়। বাংলাদেশ অ্যালুমিনিয়ামের মালিক ফারুকুল ইসলাম জানান, পণ্য সরবরাহ ও কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য প্রতিনিয়ত ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন ব্যবহার করতে হয়। কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরীর উপমহাব্যবস্থাপক মো. মুনতাসীর মামুন জানান, এ শিল্পনগরীতে ১০ হাজার ৭৫০ ফুট সড়কের মধ্যে ৫ হাজার ফুট সড়ক ভাঙাচোরা। ২১ হাজার ৫০০ ফুট ড্রেনের মধ্যে ১০ হাজার ফুট ড্রেন খারাপ। এখানকার সড়ক মেরামত ও ড্রেন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।