আজ ২৭শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ইজারাবিহীন ধোপাজান নদীতে অবৈধ টোল আদায়ে বিপাকে শ্রমিকরা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের ইজারাবিহীন ধোপাজান চলতি নদীতে প্রশাসনের চোখের সামনে দিয়ে দিন রাত চলছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্রের দ্বারা বিআইডব্লিউটিএ, টোল ট্যাক্স, পৌর ট্যাক্স ও ইউনিয়ন ট্যাক্স এর মহোৎসব। সীমান্তবর্তী ডলুরাসহ বালাকান্দা ও সৈয়দপুর এলাকায় প্রভাবশালী একটি চক্র প্রতিদিন সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলতি নদীসহ কয়েকটি স্পট থেকে প্রকাশ্যে ও রাতের আধারে অতিরিক্ত টোল ট্যাক্স আদায়ে চরম বিপাকে পড়েছেন কেটে খাওয়া হাজারো বারকি নৌ শ্রমিকরা। পৃথক পৃথক ভাবে কয়েকটি স্থানে অবৈধ টোল ট্যাক্স উত্তোলনের কারণে লক্ষ লক্ষ টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

প্রশাসনের তরফ থেকে ধোপাজান (চলতি) নদীতে বালু ও পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সংসারের তাগিদে বারকি নৌ শ্রমিকরা সনাতন পদ্ধতিতে বেলছা-বালতি দ্বারা সামান্য সামান্য বালু-পাথর উত্তোলন করে ছোট্র ছোট্র পঙ্গুপাল নৌকা দিয়ে বিক্রি করতে গেলে চরম হয়রানির শিকার হচ্চে শ্রমিকরা। একটি প্রভাবশালী যুবলীগ সিন্ডিকেট চক্র প্রকাশ্যে দিবালোকে প্রতিনিয়ত অবৈধ ভাবে শ্রমিকদের শারীরিক নির্যাতন করে স্থানে স্থানে টোল ট্যাক্স উত্তোলন করছে। বুধবার সরেজমিন ঘুরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের বালাকান্দা বাজার সংলগ্ন ধোপাজান চলতি নদীতে বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)

ঘাটে কোন ধরনের পণ্য ওঠানামা না করলেও এ ঘাট ইজারা দেয়া হয়েছে। বালাকান্দা বাজার সংলগ্ন জাকির হোসেনের ক্র্যাশার মিলের পার্শ্বে ইজারাদারের ভাই শাহেল মিয়া ও স্থানীয় প্রভাবশালী মোরাদ মিয়া বাহিনীরা এসব ঘাটে কর্তৃপক্ষের নিয়মনীতি অনুযায়ী প্রতি ঘনফুট বালুর জন্য ২৫ পয়সা টোল আদায় করার কথা। কিন্তু নেয়া হচ্ছে দেড় থেকে দুই টাকা, পাথর সাড়ে ৩ টাকা। নিয়ম অনুযায়ী বিআইডব্লিউটিএর লোকজন টোল আদায়ে দেখবাল করার কথা থাকলেও ভুলেও আসেন না। এদিকে সুরমা ইউনিয়নের বালাকান্দা বাজারের চলতি নদীর পূর্ব পাড়ে হুরারকান্দা গ্রামের কবির মিয়ার নেতৃত্বে মজিবুর রহমান, সাচ্চু মিয়া, জাকির হোসেন, আমিন মিয়া, প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা সৈয়দপুর গ্রামের ছালেক মিয়া, সামছুল ইসলাম, কাজল মিয়া, ফারুক মিয়া, মধু মিয়া গংরা প্রতি ঘনফুট বালু থেকে দুই টাকা, পাথর থেকে তিন থেকে সাড়ে তিন টাকা টোল ট্যাক্স আদায় করছে। ইব্রাহিমপুর চলতি নদীর সম্মুখে ইউনিয়ন এবং পৌর ট্যাক্সের নামে জোরপূর্বক নৌকাপ্রতি ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা আদায় করা হচ্ছে। তাদের কথা মত টাকা না দিলে নৌকা আটকে রাখা হয়, শ্রমিকদের মারধর করা হয়।

সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ডলুরা শহীদের গণকবরের পাশে (ধোপাজান) চলতি নদীতে উজান থেকে গুলায় নেমে আসা বালু-পাথর নৌপরিবহন শ্রমিকরা উড়া/টুকড়ি দিয়ে কুড়িয়ে কুড়িয়ে পঙ্গপাল নৌকা দিয়ে বিক্রি করে কোন রকমে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন যাপন করছে।

এ বিষয়ে ইউনিয়ন উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো নুর আলী বলেন, সুরমা নদীর তীরে স্তুপকৃত বালু-পাথর নৌকা দ্বারা উত্তোলন করার জন্য উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আমি সরেজমিন গিয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করি। এই ঘাটটি একসনা ইজারা প্রদান করেন উপজেলা প্রশাসন।

সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো আব্দুল আহাদ বলেন, ধোপাজান চলতি নদীতে টোল ট্যাক্সের বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ