আজ ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ডেকার হাওর গোচারণ সরকারি ভূমির মাটি বিক্রির মহোৎসব

মো আব্দুল শহীদ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষশ্রী ইউনিয়নের ডেকার হাওররের পশ্চিম পাড় সংলগ্ন গোবিন্দগাও কাঠইর মৌজার মালিকানা ও সরকারি গোচারণ ভূমির মাটি এক্সসেভেটার (ভ্যাকু) দ্বারা লক্ষ লক্ষ ঘনফুট মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করার মহোৎসব।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসমাইল রহমান ডেকার হাওরে ভ্যাকু দিয়ে মাটি উত্তোলনের অভিযোগ পেয়ে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ সহকারী কর্মকর্তা মোছা পারভিন আক্তারকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। পরে মোছা পারভিন আক্তার সরেজমিন গিয়ে ভ্যাকুর মালিক মহিবুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, সুহেল মিয়া, মনসুর আলী,সায়েম মিয়াকে মাটি উত্তোলন না করার জন্য নিষেধ করেন।

স্থানীয় মদনপুর গ্রামের কৃষক জয়নাল হাজারী জানান, আজ প্রায় তিন বছর যাবৎ মহিবুর রহমান,সাইফুল ইসলাম, সুহেল মিয়া, মনসুর আলী, সায়েম মিয়া গংরা সরকারি ও মালিকানা গোচারণ ভূমি থেকে অবৈধভাবে ৩টি ভ্যাকু ও অর্ধশতাধিক ট্রাক্টর দ্বারা মাটি উত্তোলন করে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ১৫ শত টাকা ট্রাক মাটি বিক্রি করছেন। এরা খুবই বেপরোয়া স্থানীয় কৃষক এবং প্রশাসনের নিষেধ বাঁধা না মেনে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করে যাচ্ছেন।

৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাদেক আলী জানান,ডেকার হাওরের কাঠইর মৌজার গোচারণ সরকারি ভূমি সংলগ্ন আমার অনেক ইজমালি ভূমি রয়েছে। কিন্তু ভূমিখেকো চক্র প্রভাবশালী হওয়ার কারণে জমির মালিক হয়েও মানসম্মানের ভয়ে কিছুই করতে পারছি না। হাওর থেকে ট্রাক্টর মাটি নিয়ে মহাসড়কে ঝুকির মধ্যে উঠে। এখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। যে কোন মূর্হুতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দূর্ঘটনার শিকার হতে পারে।

মদনপুর গ্রামের কৃষক আমির উদ্দিন জানান,ডেকার হাওর সংলগ্ন কাঠইর মৌজার সরকারি গোচারণ ভূমির পাশেই আমার ১ একর ভূমি রয়েছে। আমাকে না জানিয়ে আজ তিন বছর যাবৎ মহিনুর সহোদর শাহিনুর,সুহেল মিয়া,মনসুর আলী, সাইফুল ইসলাম গংরা জোরপূর্বক গরু, মহিষ, ছাগল ছড়ানো এবং ধানের কলার জায়গা থেকে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছে ওই সিন্ডিকেট চক্র। সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে সড়ক নির্মাণ করেছে। কিন্তু ট্রাক্টর মাটি নিয়ে এই রাস্তায় চলাচলের কারণে কার্পেটিংয়ের উপর মাটির প্রলেপ পড়ায় কোয়াশায় রাতে এবং ভোরে প্রায়ই দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে মোটরসাইকেল চালকরা।

ট্রাক্টর ও ভ্যাকুর মালিক মাটি বিক্রেতা মহিনুর রহমান জানান, আমি মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছি ঠিক আছে। কিন্তু আমার মত অন্য যারা মাটি বিক্রি করের তাদের বিষয়েও লেখইন যেন।

ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো সিদ্দিকুর রহমান জানান, সহকারী কমিশনার ভূমি ইসমাইল রহমান মহোদয় ডেকার হাওরে ভ্যাকু দিয়ে মাটি কাটার অভিযোগ পেয়ে উপ- সহকারী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মোছা পারভিন আক্তারকে হাওরে পাঠানোর পর তিনি ভ্যাকুর ড্রাইভার এবং ট্রাকের মালিকদের মাটি উত্তোলন না করার জন্য নিষেধ করেন। কিন্তু উনার নিষেধ বাঁধা অমান্য করে মাটি উত্তোলনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ওদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট না করলে মাটি উত্তোলন বন্ধ হবে না।

সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসরাইল রহমান জানান,মোবাইল ফোনে মাটি উত্তোলনের অভিযোগ পেয়ে উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে সরেজমিন গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছি। নিষেধ না মানলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ