রোমান আহমেদ, জামালপুর প্রতিনিধি : অতি দরিদ্রদের মাঝে ৮ লাখ বেলার খাবার বিতরণ সম্পন্ন করায় ‘ফাস্ট ফর হাঙ্গার সোসাইটি’ এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া খাবার বিতরনের জন্য ভারত এবং পাকিস্তানে নতুন লোকেশন উদ্বোধন করা হয়েছে বলে জানান তারা।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে জামালপুর শহরের সকাল বাজার এলাকায় স্টার কাবার রেস্টুরেন্টে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, ক্ষুধা নিবারনের উদ্যোগে ২০১৬ সালে এই সংগঠনটি জামালপুর থেকে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ২৭৫ জন অসহায় নারী ও পুরুষকে কার্ডের মাধ্যমে তাদের দুই সপ্তাহ পর পর ৪কেজি চাউল বিতরণ করা হয়ে থাকে।
এ ছাড়া সংস্থাটির উদ্যোগে ভারত ও পাকিস্তানের কিছু ক্ষুধার্ত মানুষদের খাবার বিতরণের জন্য নতুন লোকেশন চালু করা হয়েছে।
ফাস্ট ফর হাঙ্গার সোসাইটির সহ-সভাপতি ও বাংলারচিঠিডটকম এর সম্পাদক জাহাঙ্গীর সেলিমের সঞ্চালনায় ও সভাপতি রাফির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ রশিদ ও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জামালপুর সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন, জামালপুর আইন কলেজের প্রভাষক সরোয়ার হোসেন মহান, জামালপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হাফিজ রায়হান সাদা ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান, জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. ইউছুফ আলী, প্রেসক্লাব জামালপুরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোখলেছুর রহমান লিখন, এসএ টিভির সাংবাদিক ফজলে এলাহী মাকাম, উন্নয়ন সংঘের পরিচালক (কর্মসূচি) মোর্শেদ ইকবাল প্রমুখ।
অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ বলেন, বিদেশে যারা শারীরিক পরিশ্রম করতে যান। তারা অমানবিক পরিশ্রম করে তাদের টাকাটা দেশে পাঠান। অ্যাডভোকেট রাফি বিদেশে থেকে গর্জিয়াস লাইফ উপভোগ করতে পারতেন। সেটা বাদ দিয়ে বাংলাদেশের এই ক্ষুধার্ত মানুষের কথা চিন্তা করে। নিজে সপ্তাহে দুই দিন রোজা রেখে বা না খেয়ে জমিয়ে সেই টাকাটা ক্ষুধার্ত মানুষের খাবার কিনে দেয়া শুরু করেছেন। এটা একটা মহৎ কাজ। আমি প্রত্যাশা করি এই সহায়তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। মানবতার এই আবেদনটা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে যাক।
তিনি আরও বলেন, আমি যদি সপ্তাহে এভাবে উপবাস করি বা রোজা রাখি। আমার স্বাস্থ্য ভালো থাকছে। আবার ইসলামের দৃষ্টিতে অন্যকে খাবার খাওয়াচ্ছি। আমার ধর্মীয় কাজটাও হচ্ছে। এটা একটা মহৎ ধারণা। আমি চেষ্টা করবো যাতে এই কাজটা জামালপুরে আরও এগিয়ে যায়।
ফাস্ট ফর হাঙ্গার সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট রাফিউল ইসলাম রাফি বলেন, ফাস্ট ফর হাঙ্গার সোসাইটির মাধ্যমে আমরা হতদরিদ্রদের মাঝে ৮ লাখ বেলার খাবার বিতরণ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছি। জামালপুর, শেরপুর, বগুড়া, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও সিলেট জেলায় এই কর্মসূচির লোকেশন রয়েছে। সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানে নতুন দুটি লোকেশনে সেখানকার অসহায় হতদরিদ্রদের মাঝে খাবার বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছি। ২০১৬ সালে চালু করা এই কর্মসূচিতে বর্তমানে ২৭৫ জন অসহায় হতদরিদ্র নারী ও পুরুষকে কার্ডের মাধ্যমে তাদের জন্য নির্ধারিত লোকেশন থেকে দুই সপ্তাহ পরপর চার কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য রয়েছে এক মিলিয়ন বেলার খাবার বিতরণ সম্পন্ন করা। প্রথমদিকে এই কর্মসূচিতে খুব একটা সাড়া পাওয়া যায় নাই। এখন শুধু বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও বিদেশ থেকেও সাড়া পাচ্ছি। এই কার্যক্রমকে অব্যাহত রাখতে সকলের সহযোগিতা চাই।
সভায়, সাংবাদিকবৃন্দ, এনজিও-সংস্থার প্রতিনিধি ও ফাস্ট ফর হাঙ্গার সোসাইটির উপকারভোগীরা অংশ নেন।
Leave a Reply