আজ ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সন্তানের উপর ষড়যন্ত্রমূলক মিথ‍্যা মামলার প্রতিবাদে মায়ের সংবাদ সম্মেলন

মো আব্দুল শহীদ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সন্তানের উপর ষড়যন্ত্রমূলক মিথ‍্যা মামলার প্রতিবাদে এক মায়ের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ‍্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন ভিকটিম মোস্তাকের মা দিলরুবা খান।

সংবাদ সম্মেলনে ভিকটিম মোস্তাকের মা দিলরুবা খান বলেন, গত ০২/০৯/২০২৪ ইং আমার ছেলে মোস্তাক আহমদ সহ তার বন্ধু সাইফুল ইসলাম রাহী এবং কবিরকে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে চাঁদাবাজির ঘটনা সাজিয়ে জেলে প্রেরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ জেলা জজ আদালতে আমার ছেলে মোস্তাক আহমদ জারীকারক পদে চাকুরীর আবেদন করে এবং লিখিত পরীক্ষায় পাশও করে। পরবর্তীতে ভিকটিম কবিরের মাধ্যমে কোর্টের স্টাফ গোলাম কিবরিয়ার সাথে পরিচয় হয়। উক্ত পরিচয়ের সুবাদে গোলাম কিবরিয়া আশ্বাস দেয় যে, তিনি উক্ত নিয়োগ পরীক্ষায় পাশ করিয়ে চাকুরী দিতে পারবেন তার জন্য তাকে অগ্রিম দেড় লক্ষ টাকা দিতে হবে। চাকরির জন্য আমি আমার চাচার কাছে রাখা ২টি গরু বিক্রি করে কিবরিয়াকে দেড় লক্ষ টাকা দেই। কিন্তু কিবরিয়া আমার ছেলেকে চাকুরী দিতে পারে নাই। পরবর্তীতে আমার ছেলে কোর্টের স্টাফ কিবরিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে টাকা দেই দিচ্ছি বলে সময় পার করেন।

দিলরুবা খান বলেন, পরবর্তীতে গোলাম কিবরিয়া আজকাল করে বিভিন্ন তারিখে ৭০ হাজার টাকা ফেরত দেন। অবশিষ্ট ৮০ হাজার টাকা দেই, দিচ্ছি বলে ঘুরাইতে থাকে। পরিশেষে বিগত ০১/০৯/২০২৪ ইং রবিবারে সুনামগঞ্জ ট্রাফিক পয়েন্টে দেশবন্ধু মিস্টান্ন ভান্ডারে বসে  সর্বশেষ তারিখের জন্য অনুরোধ করে কিবরিয়া বলে যে, ০২/০৯/২০২৪ ইং তারিখে আমার অফিসে গিয়ে টাকা নিয়ে আসবেন। সেই কারণে আমার ছেলে মোস্তাক তার বন্ধু রাহী, কবিরকে নিয়ে সুনামগঞ্জ কোর্টে কিবরিয়ার নিকট টাকা আনতে যায়। ওই সময় গোলাম কিবরিয়া প্রতারণার উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে কোর্টের স্টাফদের ভুল বুঝিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে পুলিশে ধরিয়ে দেয়।

এই ঘটনায় কোর্ট কর্তৃপক্ষ সুনামগঞ্জ জেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ও জেলা বিএনপির সহ সভাপতি অ‍্যাডভোকেট সেরেনুর আলীকে তাদের দলীয় পরিচয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, এরা বিএনপির কর্মী নয়। আমরা তাদের চিনি না। কিন্তু আমার ছেলে মোস্তাক সুনামগঞ্জ পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক, সাইফুল ইসলাম রাহী সুনামগঞ্জ সৈনিক দলের সভাপতি। রাজপথে দীর্ঘদীন যাবত আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় থাকার কারণে রাহী দুইবার নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে হাজতে গিয়েছে। মোস্তাক একাধিক নাশকতার মামলার আসামী হয়েছেন।

তিনি বলেন, ষড়ন্ত্রকারী, ঘোষখোর গোলাম কিবরিয়া বিরুদ্ধে মাননীয় দায়রা জজ আদালতে পিটিশন দাখিল করেছি। এ সময় তিনি বিভিন্ন প্রমাণ প্রদর্শন করেন।

তিনি বলেন, কিবরিয়া ধর্মপাশার উপজেলার দেলোয়র হোসেনের কাছ থেকে চাকুরীর কথা বলে ২ লক্ষ টাকা নিয়েছে। যাহার রশিদ পিটিশনের সহিত সংযুক্ত করে আদালতে জমা দিয়েছি। এভাবে আরো অনেকের সাথে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাত করেছে কিবরিয়া।

তিনি আরও বলেন, সুনামগঞ্জ জেলার বিএনপিতে সক্রিয় ২টি গ্রুপিং থাকায় আমার ছেলে এক অংশের সাথে মিছিল মিটিং করে-বিধায় ষড়যন্তমূলকভাবে পরস্পর যোগসাজসে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে আমার ছেলেসহ আরও দুইজনকে ফাঁসিয়েছেন এবং বিভিন্ন স‍্যোসাল মিডিয়া আমার ছেলেকে দল থেকে বহিস্কার করেছে বলে প্রচার করেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা যদি রাজনীতির সাথে যুক্ত না থাকতো তাহলে বিএনপির একাংশ তাদেরকে বহিস্কার করে কেন? সে দলের সক্রিয় কর্মী ছিল। আমরা বিএনপির শক্তিশালী সমর্থক। দলের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতে নিজ দলের কর্মীকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তাদেরকে পরিচিত না বলে জানিয়েছেন। এ জন‍্য তিনি আদালতের কাছে ন‍্যায় বিচার প্রার্থনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভিকটিমের আত্মীয় মোহাম্মদ আলীনুর, শাহজাহান খান, মিন্টু খান, আব্দুল জলিল, রুহুল আমিন, পারুল বিবি, দেলোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ