মো আব্দুল শহীদ, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার বেহেলী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাওড়িয়া আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলামের বসতঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গ্রামের মানুষের উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার দুপুরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৪ সেপ্টেম্বর রাত অনুমান ২টায় শফিকুল মিয়ার বাড়িরঘাট আলীপুর নদী থেকে ইঞ্জিন চালিত মাছ শিকারের নৌকা চুরি করে নিয়ে যায়। পরদিন ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেল পর্যন্ত যখন শফিকুল মিয়ার পরিবারের লোকজন নৌকা খোঁজাখুঁজি করে পাননি, তখন হায় আফসোস করে নিজেদের মধ্যে উত্তেজিত স্বরে কথাবার্তা বলেন। এ সময় উত্তেজিত হয়ে উঠে গ্রামের বাসিন্দা খলিল মিয়া গংরা। তারা এসে রাগান্বিত হয়ে কথা কাটাকাটি করে চলে যান।
বক্তারা বলেন, ওইদিন সন্ধ্যায় পরিকল্পিতভাবে মারামারির উদ্দেশ্যে বাড়ির কাছে এসে পুনরায় অকথ্যভাষায় গালমন্দ করে খলিল মিয়া গংরা। একপর্যায়ে খলিল মিয়া (৫৫), পিন্টু মিয়া (৫০), আলী আহমদ (৫৫), রাজু মিয়া (২৭), বাদল মিয়া (৪৫), শাহিদ মিয়া (২৭) গংরা মারধরের ঘটনা ঘটান। মারামারির ঘটনায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রফিকুল ইসলামের বড় ভাই শফিকুল ইসলাম (৬৫) ও ছেলে জমিরুল ইসলাম (২২) গুরুতর আহত হন। পরে আহতদের তাহিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে রেফার করেন।
বক্তারা আরও বলেন, এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর বেলা অনুমান ১১টায় রফিকুলের বসতঘরে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনা করে খলিল মিয়া গংরা। এই ঘটনায় বসতঘরে থাকা অগণিত ধানের বস্তা, চাউল ৭ মণ, নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, ৪টি সিলিং ফ্যান, ৪টি কাঠের পালং, ৮টি চেয়ার, ২টি টেবিল, মাছ শিকারের নৌকা ১টি ও অন্যান্য আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায়। একই সাথে টিনশেট ঘরের চারপাশের ভেড়া, রুমের ভেতরে পার্টিশন ভাংচুর, বিদ্যুৎ মিটারও ভাংচুর করে পালিয়ে যায় খলিল মিয়া গংরা।
মানববন্ধন চলাকালে নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা এবং গ্রামবাসীরা এই সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন মো. আক্তার আলী, মো. আব্দুল আউয়াল তালুকদার, ফারুক আহমদ, রফিকুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, জমিরুল ইসলাম, হুসেন মিয়া, কারিমুল মিয়া, রনি আহমদ, মিজান হোসেন, আখিনুর, নজির হোসেন, খাবিরুল ইসলাম, শাহাব উদ্দিন, তুহিন মিয়া, মনির হোসেন, ইব্রাহিম মিয়া, মারুফা বেগম, তুহিনা বেগম, রিজিকা বেগম, রোকশানা বেগম, রাতিমুন নেছা, মৌসুমা বেগম, তাছলিমা বেগম, করুনা বেগম প্রমুখ।
নির্যাতিত আহত রফিকুল ইসলাম বলেন, হামলার ঘটনায় আমার বসতঘর ভেঙ্গে ফেলেছে। এখন রাত্রিযাপনের জায়গা নেই। ঘরের আসবাবপত্র সব লুট করে নিয়ে গেছে খলিল মিয়া গংরা। পানি করার মত একটি গ্লাসও রেখে যায়নি তারা। আমি ন্যায় বিচার পেতে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
অভিযুক্ত ব্যক্তি খলিল মিয়া বলেন, আমারও ক্ষতি করেছে। আমি অন্য ঝামেলায় ব্যস্ত। পরে আলাপ করবো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জয়নাল মিয়ার মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি।তাই বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
জামালগঞ্জ থানার সাব ইন্সপেক্টর তদন্তকারী অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেইন বলেন, আমি সরেজমিনে যা আলামত পেয়েছি, তা আদালতে প্রতিবেদন আকারে পাঠিয়েছি। তবে এই লুটপাটের ঘটনায় বাদীর ঘরে কেউ না থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সহ আসবাবপত্র প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার লুটপাট হয়েছে।
Leave a Reply