নড়াইল জেলা প্রতিনিধি : নড়াইলের রূপগঞ্জ বাজারের চারটি বড় পৌর মার্কেট উচ্ছেদ। নড়াইলে অবৈধ ৩ শতাধিক দোকান উচ্ছেদ, দূর হচ্ছে ফোরলেনের বাধা।
নড়াইল সদর উপজেলায় ফোরলেন সড়কের কাজ বাস্তবায়নে বড় বাধা ছিল শহরের মধ্যে থাকা অবৈধ দোকান-পাটগুলো। অবশেষে এ সব মার্কেট উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে সেনাবাহিনী ও সড়ক বিভাগ যৌথভাবে মার্কেটগুলো গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এতে ভাঙা পড়ে রূপগঞ্জ বাজারের চারটি বড় পৌর মার্কেট ও প্রেসক্লাব মার্কেটসহ তিন শতাধিক দোকান পাট।
উচ্ছেদ অভিযানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, ২০২১ সালে একনেক সভায় নড়াইল শহরাংশের জাতীয় মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৫ দশমিক ৭৯১ কিলোমিটার ফোরলেন সড়ক অনুমোদন পায়। সড়কটি সদরের মালিবাগ থেকে নড়াইল শহর হয়ে সীতারামপুর গিয়ে যশোর বেনাপোল মহাসড়ককে যুক্ত করেছে। দফায় দফায় নোটিশ পাঠিয়ে মাইকিং করেও সফল হয়নি সড়ক বিভাগ, উচ্ছেদ করা যায়নি অবৈধ দোকানপাট। নির্দিষ্ট মেয়াদে ফোরলেন সড়কের কাজ সম্পন্ন করতে এখন উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। এদিকে, হাইকোর্টে ব্যবসায়ীরা মামলা করলে কয়েক দফা পিছিয়ে যায় মার্কেট অপসারণের কার্যক্রম। জেলার সবচেয়ে বড় এ বাজারে তিন শতাধিক দোকান রয়েছে। যার সঙ্গে কয়েক হাজার মানুষের সংসার চলে।
উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, ভাঙার নোটিশ কয়েকবারই দেয়া হয়েছে। আমাদের পুনর্বাসন করার আশ্বাস দিয়েছিলেন সাবেক এমপি ও পৌর মেয়র। এখন আমরা কয়েক হাজার মানুষ বেকার হয়ে গেলাম। আমরা কোথায় যাব? এখন সংসার চালানো দায়।
নড়াইল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ এগিয়ে নিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে বিভিন্ন সময়ে নোটিশ দেয়া হলেও দখলদাররা জায়গা খালি না করায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে হয়েছে। কয়েকটি মার্কেটের আদালতে মামলা রয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি হলে বাকিগুলো উচ্ছেদ করা হবে।
এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর শহরের ভওয়াখালী এলাকায় তিনটি পাকা স্থাপনা, কয়েকটি বাউন্ডারি ওয়াল, ১২টি টিনসেড দোকান এবং ৩০ টির মতো ফুটপাতের কাঁচা অস্থায়ী ঘর উচ্ছেদ করা হয়। প্রশস্তকরণ কাজে বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে ফেলার আওতায় শহরের ভওয়াখালী ও রূপগঞ্জ বাজারের ব্যক্তি পর্যায়ের বেশ কয়েকটি মার্কেট, নড়াইল পৌরসভা ও জেলা পরিষদের কয়েকটি মার্কেটও রয়েছে।
উল্লেখ্য, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ১৭৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ফোরলেন প্রকল্পের কাজ চলছে। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ থাকলেও স্থাপনা অপসারণ ও মামলা জটিলতায় আগামী বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রকল্পের ৫৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ কাজটি বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর এবং সড়ক বিভাগের পক্ষে কাজটি তদারকি করছে সেনাবাহিনী। ২০২৫ সালের জুন মাস নাগাদ কাজটি সম্পন্ন হবে।
Leave a Reply